স্কুলের সমৃদ্ধির জন্য ১১ বছরের ছাত্রকে বলি দেওয়ার অভিযোগ উত্তরপ্রদেশে
উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ডিএল পাবলিক স্কুলের ১১ বছরের এক আবাসিক ছাত্রকে ‘বলি’ দেওয়ার অভিযোগকে উঠেছে। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই বিদ্যালয়।
রসগাওয়াঁ গ্রাম থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে ধান ও বাজরা ক্ষেতের মাঝে অবস্থিত এই দোতলা ছাত্রাবাস।
ঘটনার পর ডিএল পাবলিক স্কুলের গেটে তালা ঝোলানো রয়েছে। যে বোর্ডে স্কুলের নাম লেখা ছিল তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্কুলের বাইরে বড় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর।
স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রামবাসীদের অনেকে মানতে পারছেন না যে ‘একটা ভালো ইংরেজি মাধ্যম এই বিদ্যালয়ে’ এক আবাসিক ছাত্রকে ‘বলি দেওয়া হয়েছে’।দিন কয়েক আগে এই বিদ্যালয়ের হোস্টেলে আবাসিক ছাত্র কৃতার্থ কুশওয়াহারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। আনুমান করা হচ্ছে, ঘটনাটা ২২-২৩শে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি রাতের।
পরদিন সকালে অর্থাৎ ২৩শে সেপ্টেম্বর সকালে, পড়ুয়ার মৃতদেহ বিদ্যালয়ের ম্যানেজার দীনেশ বাঘেলের গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। সেই সময় ছাত্রের পরনে স্কুলের পোশাক ছিল। তার ব্যাগও ওই গাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয়।
নিহত ছাত্রের গলায় গাঢ় লাল দাগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বাসরোধের ফলে মৃত্যু হয়েছে তার। গলার হাড়ও ভাঙা ছিল।
সাম্প্রতিকতম তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তার মধ্যে রয়েছেন, স্কুল ম্যানেজার দীনেশ বাঘেল, তার বাবা যশোধন বাঘেল, প্রিন্সিপাল লক্ষ্মণ সিং এবং স্কুল চত্বরে বসবাসকারী দুই শিক্ষক। আপাতত তারা জেল হেফাজতে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত ধৃত যশোধন বাঘেল যিনি ঐ অঞ্চলে ‘ভগত জি’ নামে পরিচিত এক সময় ওঝার কাজ করতেন। সাত বছর আগে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত তথাকথিত ‘ঝাড় ফুঁক’ এবং ‘ভুত তাড়ানোর’ কাজ করেছেন।
নাবালক ওই ছাত্রকে যে ‘বলি দেওয়া হয়েছে’ সে কথা মেনে নিয়েছে পুলিশ। সংবাদমাধ্যমকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ‘স্কুলের উন্নতি এবং সমৃদ্ধির’ জন্য ওই শিশুকে ‘বলি’ দেওয়া হয়েছে।
মতামত দিন